
Book
বই পড়ার অভ্যাস এবং উপকারিতা
‘বই’ দুই বর্ণের একটি শব্দ মাত্র। যা এসেছে আরবি ‘ওহি’ থেকে। আরবি ‘ওয়াও’ হরফের বাংলা উচ্চারণ হয় ‘ব’। ওহির বাংলা উচ্চারণ হয় বহি। ধীরে ধীরে ভাষার পরিবর্তনে বহিটি বই রূপ ধারণ করেছে। এভাবে বইয়ের সঙ্গে ঐশী জ্ঞানের একটা সম্পর্ক রয়েছে। বই পড়লে মানুষের জ্ঞানের দ্যুতি বাড়ে। আমাদের জীবসত্তা জাগ্রত থাকলেও মানবসত্তা জাগ্রত করার সিঁড়ি হচ্ছে বই।

Book
তৎকালীন নারীসমাজের অবস্থার প্রতিবিম্ব ‘অবরোধ বাসিনী’
নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন লেখা ‘অবরোধ বাসিনী’ একটি অনুগল্প সংবলিত বই। সাধু ভাষায় লেখা এ বইটিতে সম্মিলন ঘটেছে মোট ৪৭টি গল্পের। গল্পগুলোর মাধ্যমে লেখিক তৎকালীন সময়ের বাংলার হিন্দু-মুসলমান সমাজের পর্দার চিত্র তুলে ধরেছেন। ব্যঙ্গ-করুনার মাধ্যমে ফুটিয়েছেন সে সময়কার কিছু হীন ঘটনাকে যা তার নিজের জীবন, বাস্তব অভিজ্ঞতা আর বিশিষ্টজনের লেখালেখি থেকে সংগৃহীত।

Book
ইন্দুবালা ভাতের হোটেল: বেদনার আততিতে এক অসহ্য আনন্দ
ইন্দুবালা এক স্মৃতি কাতরতার নাম। তাঁর স্মৃতিতে সবসময় সবুজ পূর্ব বাংলার খুলনায় কপোতাক্ষ নদ তীরবর্তী কলাপোতা নামের একটা গ্রাম; গ্রামের প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ, আর কাছের মানুষজন। ইন্দুবালা বেদনায় আদ্র কোমল এক স্মৃতির আখ্যান। এই স্মৃতি সারাজীবন বয়ে বেড়ানো মিষ্টি প্রেমের; এই স্মৃতি জীবনের, জীবিকার, একলা মানুষের তুমুল সংগ্রামের। ভাতের হোটেলে তিনি অফুরন্ত বিলিয়ে চলেন তাঁর স্মৃতি রান্নার এক পদ থেকে অন্য পদে।

Book
শওকত আলীর ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’: চূর্ণকালে ব্রাত্যজন
‘রাঢ় বরেন্দ্র বঙ্গ সমতটবাসী প্রাকৃতজনের সংগ্রামী পূর্বপূরুষদের স্মরণে‘ আদিতেই উৎসর্গপত্রে ঔপন্যাসিক আমাদের ইতিহাসের ইঙ্গিত দেন এভাবে। বলেন ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’ এর ইতিহাস, প্রেক্ষাপট এবং সময়ের কথা। আটশ‘ বছরেরও আগে সেন রাজত্বের কথা। উপন্যাসের নামকরণ আগে থেকেই পাঠকের দৃষ্ঠিতে গেঁথে দেয় অন্ধকার সময় এবং সেই সময়ে বসবাসকারী অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষের চেহারা।

Book
‘সুখলতার ঘর নেই’—অর্ণবদর্পণে মানবজীবন
মাওয়ার ইলিশ, পদ্মার ইলিশ, পায়রার ইলিশ, চাঁদপুরের ইলিশ—এক ইলিশের এদেশে স্থান এবং নদীসাপেক্ষে কত কত নাম! মাছবিক্রেতার মাথার সাজিতে চড়ে হাঁটতে হাঁটতে ইলিশের নামবদল হতে পারে এমন স্থান আর নদীর বিবেচনায়।

Book
আহমদ রফিকের ‘ঢাকার মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো’
ভাষাসংগ্রামী, রবীন্দ্র–গবেষক, কবি ও প্রাবন্ধিক আহমদ রফিক ‘ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো’ বইটিতে তিনি একাত্তরের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দুইভাবে তুলে ধরেছেন। সেই সময়ের পরিস্থিত ও পরিবেশ দেখা, শোনা ও জানার নানা ঘটনাচিত্র এই বইয়ের ফুটে তুলেন।

Book
প্রসঙ্গ: বুলবুল চৌধুরী’র ‘এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে’ গ্রন্থ আলোচনা
লক্ষ্মী একটি মেয়ের নাম। যিনি এই উপনাসের কথক এবং প্রধান চরিত্র। বাংলা সিনেমায় যাকে নায়িকা বলা হয়। লক্ষ্মী একজন যৌনকর্মী। “এই ঘরে লক্ষ্মী থাকে ” যৌনপল্লীর একটি ঘরের নাম। যা লেখা আছে লক্ষ্মীর ঘরের দরজায়। যে ঘরে খদ্দেরের সঙ্গে পয়সার বিনিময় যৌনাচারে লিপ্ত হয় লক্ষ্মী। লক্ষ্মী হিতেশ আচার্যের পালিত মেয়ে। হিতেশ আচার্য খিলগাঁও সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। নিশিপুর রেলস্টেশন থেকে কুঁড়িয়ে এনেছিলেন লক্ষ্মীকে।

Book
মৈত্রেয়ী–বাংলার রাত ও “ন হন্যতে” : প্রকাশের পিছনের কিছু কথা
‘ন হন্যতে’ ও মৈত্রেয়ী-বাংলার রাত চল্লিশ বছরের ব্যবধানে লেখা দুটি উপন্যাস। ভিন্ন সামাজিক অবস্থানে বেড়ে উঠা দুই জন মানুষের আত্মকথা। সময়ের পরিক্রমায় মির্চা এবং মৈত্রেয়ী দুজনেই বিখ্যাত হয়েছেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে। ১৯৩৩ সালে মির্চা ছিলেন বয়েসে যুবক ও লেখক হিসেবে নতুন। মির্চার লেখায় কাঁচা হাতের ছাপ ও ভগ্ন হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি স্পষ্ট।

Book
নিজের স্বপ্নকে জাগিয়ে তুলে রিজিয়া রহমানের `নদী নিরবধি’
‘মানুষ তো চিরকাল পৃথিবীর প্রান্ত থেকে প্রান্তে অভিবাসন তৈরি করে চলেছে, মানুষ আসলে অনন্তকালের অভিযাত্রী।’ এই লাইন দিয়ে শুরু করেছেন লেখক রিজিয়া রহমানের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ নদী নিরবধি । পারিবারিক একটি সংলাপের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর জীবনসংগ্রামের আত্মকথন। বইটি প্রকাশিত হয় ২০১১ সালের অমর একুশে গ্রন্থ মেলা। প্রকাশ করেন ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ। প্রচ্ছদ করেন নিয়াজ চৌধুরী তুলি।
Book
ড. সুনীল কান্তি দে’র সম্পাদনায় ‘বঙ্গবন্ধুর অপ্রকাশিত চিঠিপত্র’
বঙ্গবন্ধু ছাত্র জীবন থেকে ডায়েরি বা দিনপঞ্জিকা লিখতেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ১৯৭২ সালে নিউইয়র্ক টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ডেভিড ফ্রস্ট কর্তৃক ধানমন্ডির ৩২নং বাড়িতে গৃহীত সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধু এ বিষয়ে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানি ফৌজ আমার সবকিছু লুন্ঠন করেছে। কিন্তু এই বর্বর বাহিনী আমার আসবাবপত্র, কাপড়-চোপড়, আমার দ্রব্য সামগ্রী লুন্ঠন করেছে তাতে আমার দুঃখ নাই। আমার দুঃখ, ওরা আমার জীবনের ইতিহাসকে লুন্ঠন করেছে। আমার ৩৫ বছরের রাজনৈতিক দিনলিপি ছিল। আমার একটি সুন্দর লাইব্রেরি ছিল। বর্বররা আমার প্রত্যেকটি বই আর মূল্যবান দলিলপত্র লুন্ঠন করেছে।’

Book
‘তারিণী মাঝি’—বাঁচার আকুতি
‘তারিণী মাঝি’ যেখানে শুরু হয়, সেখানেই, শেষ করবার জন্য প্রয়োজনীয় কৌশলটা অবলম্বন করতে তারাশঙ্কর ভোলেননি। তারিণীকে লম্বাচওড়া বানাতে গিয়ে তিনি আমাদের নিতাইচরণ বীরবংশীর কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন কিছুটা হলেও। আমি শারীরিক বিবরণের কথা বলতে চাচ্ছি।

Book
মৈত্রেয়ী-বাংলার রাত ও ‘ন হন্যতে’: সাহিত্যের সীমানা
১৯৩০ এর দশক। এক রোমানীয় যুবক বিদ্যা অর্জন ও ভাগ্যের চড়কায় গতি আনতে ভারতে আসেন। কলকাতায় ঠাঁই নিলেন মির্চা এলিয়াদ (Mircea Eliade) । মির্চা এলিয়াদের বয়স তখন মাত্র ২০ এর কোঠায়। ভারতীয় সংস্কৃতির প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল মির্চার। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত ভাষার অধ্যাপক পণ্ডিত সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত পরিবারে থাকার ব্যবস্থা হয় মির্চা এলিয়াদের।

Book
১৯৭১ ঘাতক-দালালদের বক্তৃতা ও বিবৃতি
দন্ত্যস রওশন চার লাইনের মহাকাব্য! হ্যাঁ, আমার কাছে অন্তত তাই! অল্প কথায় ‘অনেক কথা’ প্রকাশ করা সম্ভব হলে- হাজার লক্ষ শব্দ নিয়ে টানাটানির প্রয়োজন হয় না! তাই বলে লক্ষ-কোটি শব্দ নিয়ে কাব্য সাহিত্য রচনার প্রয়োজন এই চারলাইনই ‘মিটিয়ে দিল’- এমনটি বলার মত মুর্খতা আমার নেই।

Book
যৎকিঞ্চিৎ বুদ্ধদেব গুহ
২৯ কি তাঁর জীবনের এক নির্ণায়ক সংখ্যা? বুদ্ধদেব গুহের জন্ম ২৯ জুন ১৯৩৬, চলে যাওয়ার দিন ২৯ আগস্ট ২০২১। নির্ণায়ক হোক বা না হোক জোড়-বিজোড়ের মানুষজীবনকেই তো নিজের সারাজীবনের লেখায় সু-বাঙ্ময় করেছেন তিনি।

Book
‘জগমগি’—সাহসিকার পূর্ণ আখ্যান
বুদ্ধদেব গুহ শুরু করি ‘মাধুকরী’ দিয়ে। সে আমার জন্য প্রচণ্ড বিদঘুটে সময়। বড়োসড়ো কলেবরের বইটার হাত ধরে বেশিদূর হাঁটা হয়নি। তবু ‘বানজার’ নদীর কথা মনে আছে। মনে আছে—পাহাড়িয়া এক ভারতভূমির অল্পস্বল্প বিবরণে তৃষিতই লাগছিল। একপর্যায়ে কী কারণ অথবা অকারণে যেন খেই হারিয়ে ফেলি।